বাড়ি Health A-Z এই বর্ষাকালে জলবাহিত যে সব রোগগুলি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে

      এই বর্ষাকালে জলবাহিত যে সব রোগগুলি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে

      Cardiology Image 1 Verified By Apollo General Physician October 6, 2023

      8800
      এই বর্ষাকালে জলবাহিত যে সব রোগগুলি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে

      বর্ষার সাথে সাথে কিছু রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকে। ভারতে হওয়া বেশিরভাগ অসুস্থতার কারণ জলবাহিত সংক্রমণ। পানীয় জল যখন বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু থাকা মানুষ বা প্রাণীর মলের সংস্পর্শে আসে, তখন এটি ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস এবং এমনকি পোলিওর মতো বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নীচে বর্ষাকালে সতর্ক থাকা প্রয়োজন এমন সাধারণ জলবাহিত রোগগুলির একটি তালিকা দেওয়া হল।

      সাধারণ জলবাহিত রোগ

      ব্যাকটেরিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস, ডায়রিয়া, ডার্মাটাইটিস, আমাশয় এবং শিগেলোসিসের মতো জলবাহিত রোগ সৃষ্টি করে।

      জলের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসগুলি মধ্যে আছে পোলিওর ভাইরাস, যা স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে এবং যার ফলে মেনিনজাইটিস হতে পারে; অ্যাডেনোভাইরাস যা শ্বাসযন্ত্রের উপসর্গ তৈরি করে এবং রোটাভাইরাস সৃষ্টি করে; এন্টারোভাইরাস এবং ইকোভাইরাস যা ডায়ারিয়ার সৃষ্টি করে; এবং হেপাটাইটিস যা হেপাটাইটিস এ এবং ই সৃষ্টি করে।

      জলের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কিছু কৃমি হল, অ্যাসকেরিয়াসিস বা গোলাকার কৃমি, ড্রাকুনকুলিয়াসিস বা গিনি কৃমি, ট্রাইচুরিস বা হুইপওয়ার্ম, অ্যামিবিয়াসিস, হুইপ কৃমি এবং ফিতা কৃমি সংক্রমণ।

      প্রোটোজোয়া হল, জলবাহিত রোগ যেমন গিয়ারডিয়াসিস, ডায়রিয়া এবং আমাশয় এর জন্য দায়ী জীব।

      কিছু গুরুত্বপূর্ণ জলবাহিত রোগের বর্ণনা

       কলেরা –

      কলেরা হল ভিব্রিও কলেরা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি তীব্র সংক্রমণ। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির জনসংখ্যার একাংশে মহামারী প্রাদুর্ভাব ঘটায় এই ভাইরাস। যেখানেই স্বাস্থ্যবিধি এবং স্বচ্ছতাকে কম অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, সেখানেই কলেরা কুৎসিত ভাবে চাগাড় দিয়ে উঠে। শহরগুলির প্রবল জনসংখ্যা কেবল সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে তোলে।

      প্রতিরোধ:  ভ্রমণকারীদের যদি ঘন ঘন কলেরার প্রাদুর্ভাব হয়, এমন জায়গায় যান, তবে তাদের টিকা দেওয়া যেতে পারে।

      টাইফয়েড –

      টাইফয়েডকে অন্ত্রের জ্বরও বলা হয়। এটি এর আগেও অনেক প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ক্রমাগত জলের মত মল যাকে চালের জলের মতো মলও বলা হয় এবং পাশাপাশি জ্বর হল এই অসুস্থতার বৈশিষ্ট্য।

      প্রতিরোধ: যেহেতু টাইফয়েড অত্যন্ত সংক্রামক, তাই রোগীদের আলাদা ভাবে বা হাসপাতালে রাখা উচিত। টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব আছে এমন এলাকায় ভ্রমণকারীদের জন্য টিকা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

      পোলিও –

      পোলিওর পুরো নাম হল পোলিওমাইলাইটিস। এটি এমন একটি সংক্রমণ যা বর্ষাকালেই ঘটে থাকে। এই সংক্রমণের উৎস হল দূষিত জল বা খাবার এবং ব্যাকটেরিয়া ছড়ানো মাছি। পোলিও প্রথমে পরিপাকতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং সেখান থেকে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে, এটি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে বিভিন্ন মাত্রার পক্ষাঘাত, অ্যাসেপটিক মেনিনজাইটিস এবং এমনকি মৃত্যুও ঘটে।

      প্রতিরোধ: পোলিওর জন্য সঠিক টিকাদান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভারতে শিশুদের জন্য পোলিও টিকা বাধ্যতামূলক। সরকার পোলিও টিকা শিবিরের মাধ্যমে বিনামূল্যে টিকা দানের ব্যবস্থা করে প্রতিটি শিশুর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। 

      অ্যাসকেরিয়াসিস

      এটি সবচেয়ে পরিচিত কৃমির উপদ্রব। এর উপসর্গ হল পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং কাশি। কৃমি বমি বা মলের মাধ্যমে শরীর ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারে।

      প্রতিরোধ: পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলার পাশাপাশি, জনবহুল এলাকায় জীবাণুনাশের কর্মসূচী নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া উচিৎ। 

      ড্রাকুনকুলিয়াসিস –

      এটিকে গিনি কৃমি রোগও বলা হয় এবং এটি ভারত, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের পরিচিত রোগ। সংক্রামিত সাইক্লোপস দ্বারা দূষিত জল পান করে মানুষ এতে সংক্রমিত হয়। সাইক্লপস হল একটি ক্রাস্টেসিয়ান যা মিঠা জলে পাওয়া যায়।

      প্রতিরোধ: সুগভীর কুয়ো ও পুকুর পরিষ্কার রাখতে হবে।

      অ্যামিবিয়াসিস

      যখন পরজীবী ই. হিস্টোলাইটিকা মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়, তখন উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক এটিকে অ্যামিবিয়াসিস বলা হয়। জলের পাইপগুলি নর্দমা দ্বারা দূষিত হলে এটি থেকে মহামারীর সম্ভবনা তৈরী হতে পারে।

      প্রতিরোধ: মল দ্বারা দূষিত হওয়া জল এবং খাদ্য খাওয়া উচিত নয়।

      জল বাহিত রোগের লক্ষণ

      গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালের লক্ষণগুলি সবচেয়ে সাধারণ এই ক্ষেত্রে। তলপেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া এবং আমাশয় হতে পারে।

      অন্যান্য উপসর্গ যেমন পোলিওর কারণে মেনিনজাইটিস, হেপাটাইটিস এ এবং ই ভাইরাসের কারণে হেপাটাইটিস জন্ডিস এবং অন্যান্য উপসর্গ সৃষ্টির কারণ হতে পারে।

      জলবাহিত রোগের রোগনির্ণয়

      সাধারণত একটি নিয়মাফিক মল পরীক্ষাই যথেষ্ট। দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় নিয়মাফিক রক্ত ​​পরীক্ষায় রক্তাল্পতা বা উচ্চ ইএসআর প্রকাশ হতে পারে।

      জলবাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্য কিছু সাধারণ টিপস

      • খাবার এবং পানীয় জলে হাত দেবার আগে  ভালভাবে হাত ধুয়ে নিন 
      • নর্দমার পাইপের সাথে জলের পাইপের দূষিত হওয়া এড়িয়ে চলুন। ফাটা পাইপ তৎক্ষণাৎ মেরামত করে নিন।
      • বাইরের খাবারের গুণমান নিয়ে সন্দেহ হলে তা এড়িয়ে চলুন 
      •  কাঁচা খাওয়ার আগে খাদ্য দ্রব্যগুলি কলের নীচে ভালো করে ধুয়ে নিন
      • রোগের লক্ষণগুলি আরও খারাপ হলে এবং ব্যক্তিটি জলশূন্য হয়ে গেলে একজন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দ্রুত চিকিৎসা করান
      • বিভিন্ন সংক্রমণের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। তাই নিজে থেকে ওষুধ খাবার চেষ্টা করবেন না
      •  আপনার চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। নোংরা, জনাকীর্ণ এলাকায় বসবাস এড়িয়ে চলুন
      • ঢেকে রাখা পাত্রে বা পরিষ্কার বোতলে পানীয় জল সংরক্ষণ করুন
      https://www.askapollo.com/physical-appointment/general-physician

      Our expert general medicine specialists verify the clinical accuracy of the content to deliver the most trusted source of information makine management of health an empowering experience

      Cardiology Image 1

      Related Articles

      More Articles

      Most Popular Articles

      More Articles
      © Copyright 2024. Apollo Hospitals Group. All Rights Reserved.
      Book ProHealth Book Appointment
      Request A Call Back X