Verified By Apollo Oncologist January 3, 2024
10433ভারতে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাবের হার প্রতি বছর 1,00,000 জনের মধ্যে 1 জন করে। ভারতে পুরুষদের মধ্যে এর প্রাদুর্ভাবের হার 0.5 থেকে 2.4, যেখানে মহিলাদের মধ্যে, এটি প্রতি 1,00,000 জনের মধ্যে 0.2 থেকে 1.8। অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণ হল ধূমপান এবং কম সক্রিয় জীবনযাপন।
অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার হল এমন এক অবস্থা যখন অগ্ন্যাশয়ের কলাতে ক্যান্সার কোষগুলি জন্মায়। অগ্ন্যাশয় হল পাকস্থলীর পিছনের গহ্বরে উপস্থিত একটি অঙ্গ। অগ্ন্যাশয় পাচক রস, ইনসুলিন এবং অন্যান্য হরমোন সহ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত করে যা হজমে সহায়তা করে এবং রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যান্সার কোষগুলি অগ্ন্যাশয়ের যে কোনও অংশে হতে পারে। তবে, অগ্ন্যাশয়ে ক্যান্সারের সূচনা সবচেয়ে বেশি হয় অগ্ন্যাশয় থেকে পাচনতন্ত্রে পাচক রস বহন করে যে নালী তার আস্তরণের উপর।
দুর্ভাগ্যবশত, অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের লক্ষণগুলি রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে দেখা যায় না। ক্যান্সার যখন মূল পর্যায়ে পৌঁছায় এবং অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে তখন রোগীরা এর উপসর্গ অনুভব করে। এই পর্যায়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা কঠিন এবং এক্ষেত্রে আক্রমণাত্মক থেরাপির প্রয়োজন।
অগ্ন্যাশয় হল অন্তঃক্ষরা এবং বহিঃক্ষরা উভয় গ্রন্থি। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিগুলি সরাসরি রক্তের প্রবাহে রাসায়নিকগুলি নিঃসরণ করে, অপরদিকে বহিঃক্ষরা গ্রন্থিগুলি একটি নালীর মাধ্যমে রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে। অগ্ন্যাশয়ের অভ্যন্তরে ক্যান্সারের উৎসের উপর নির্ভর করে, অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার দুই প্রকারের হয়:
• বহিঃক্ষরা অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার: দুর্ভাগ্যবশত, বেশিরভাগ অগ্ন্যাশয় টিউমারগুলিই ক্যান্সারযুক্ত। বহিঃক্ষরা অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরণগুলি হল – জায়ান্ট সেল কারসিনোমা, অ্যাডেনোসকোয়ামাস কারসিনোমা এবং অ্যাকিনার সেল কারসিনোমা।
• অন্তঃক্ষরা অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার:
এই ধরনের অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার সাধারণত খুব একটা পরিচিত নয়। অন্তঃক্ষরা অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের প্রকারগুলি হল সোমাটোস্ট্যাটিনম, ইনসুলিনোমাস এবং গ্লুকাগনোমাস।
রোগীরা মূল পর্যায়ে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণগুলি অনুভব করে থাকে। তবে শুধু কয়েকটি লক্ষণের উপস্থিতিই অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের উপস্থিতি নিশ্চিত করে না। লক্ষণগুলি অন্যান্য অন্তর্নিহিত চিকিৎসার অবস্থার কারণেও হতে পারে। অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ হল:
অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণ দেখায় না। শীঘ্রই আপনার ডাক্তারের সাথে একটি সাক্ষাৎকার নির্ধারণ করুন যদি:
● আপনার যদি জন্ডিস বা অন্য কোনো উপসর্গ থাকে যা আপনাকে উদ্বিগ্ন করেছে
● আপনার যদি ক্রমাগত ক্লান্তি, বমি বমি ভাব এবং বমি হয়
● যদি আপনার অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে
● আপনার যদি অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস থাকে।
একটি কোষের ডিএনএ সেই কোষের কার্যকারিতা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ধারণ করে। এরকম একটি তথ্য হল কখন এবং কী হারে কোষ বিভাজন ঘটবে। কিন্তু, এই ডিএনএ তথ্যের কিছু পরিবর্তনের কারণে, যা একটি পরিব্যক্তি হিসাবে পরিচিত, কোষটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হয়, যার ফলে অনিয়ন্ত্রিত কোষগুলি একত্রে জমা হয়। এই জমা কোষেরাই টিউমার গঠন করে। একই ভাবে অগ্ন্যাশয়ের কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হলে অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার হয়। তবে কেন এমন হয় সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য নেই।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার কেন হয় সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা না থাকলেও কিছু কারণ অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এই কারণগুলি হল:
● জিনঘটিত রোগ যেমন লিঞ্চ সিনড্রোম।
● লিঙ্গ, যেহেতু পুরুষদের অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের প্রবণতা বেশি।
● কীটনাশক বা রঞ্জক জাতীয় রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা।
● অন্তর্নিহিত চিকিৎসা অবস্থা যেমন লিভার সিরোসিস, ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস বা জিনজিভাইটিস।
● ধূমপান, নিয়মিত ব্যায়ামের অভাব বা অত্যধিক ওজন
অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের চিকিৎসা রোগের পর্যায়ের উপর নির্ভর করে। কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি হল:
● কেমোথেরাপি: কেমোথেরাপিতে এমন ওষুধ ব্যবহার করা হয় যা ক্যান্সার কোষকে মেরে ফেলে। ক্যান্সার যখন অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে তখনও এটি কার্যকর। ডাক্তাররা সাধারণত কেমোথেরাপির সাথে রেডিয়েশন থেরাপি ব্যবহার করে থাকেন।
● রেডিয়েশন থেরাপি: রেডিয়েশন থেরাপি ক্যান্সার কোষকে মেরে ফেলার জন্য উচ্চ-শক্তির বিকিরণ ব্যবহার করে। কিছু ক্ষেত্রে, ডাক্তার অস্ত্রোপচারের সময়ও রেডিয়েশন থেরাপি ব্যবহার করতে পারেন।
● সার্জারি: ডাক্তার টিউমার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার করতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে, ডাক্তার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অগ্ন্যাশয়টাই অপসারণ করে দেয়।
রোগের অগ্রগতির সাথে সাথে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের জটিলতা দেখা দেয়। কিছু জটিলতা হল:
নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলির মাধ্যমে, আপনি অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারেন:
অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার হল অগ্ন্যাশয়ে হওয়া ক্যান্সার। এই অবস্থার চিকিৎসা করা কঠিন, কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে রোগী এর কোন লক্ষণগুলিই অনুভব করে না। আপনি যদি অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন, তাহলে আপনার নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত।ক
1. অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার আক্রান্তের বেঁচে থাকার হার কত?
ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ প্রকারের মধ্যে, অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সাধারণত, অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের 5 বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার হার মাত্র 9%।
2. অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার কি একে অপরের সাথে সম্পর্কিত?
বিআরসিএ পরিব্যক্তি স্তন এবং ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এই পরিব্যক্তি অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত মোট লোকের মধ্যে 5% এর বিআরসিএ পরিব্যক্তি রয়েছে।
3. অগ্ন্যাশয় ছাড়া জীবন কি সম্ভব?
হ্যাঁ, অগ্ন্যাশয় ছাড়া জীবন সম্ভব। তবে, অগ্ন্যাশয়বিহীন লোকদের রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণের জন্য ইনসুলিন নিতে হবে। এছাড়া তাদের এমন ওষুধও খেতে হবে যা হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
Our dedicated team of experienced Oncologists verify the clinical content and provide medical review regularly to ensure that you receive is accurate, evidence-based and trustworthy cancer related information