Verified By Apollo Doctors August 10, 2023
14484চলতি মাসে (মে ২০২২) বিভিন্ন দেশে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ২০২২-এর মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এখন অবধি ইউনাইটেড কিংডমে (ইউ কে) ২০ জন এই বিরল ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
১৩ মে, ২০২২ থেকে এখন অবধি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা ডব্লিউএইচও) তিনটি অঞ্চলে রাষ্ট্রপুঞ্জের এমন ১২টি সদস্য দেশে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে, যে দেশগুলি এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে এনডেমিক নয়, অর্থাৎ যে দেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা ছিল না।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটির সংক্রমণ এবং টিকা বিষয়ে আলোচনা করার জন্য ডব্লিউএইচও আপৎকালীন বৈঠক ডেকেছে।
মাঙ্কিপক্স এমন একটি ভাইরাল সংক্রমণ, যা যা পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ অনেকটাই স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের মতো। তবে এ ক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা গুটিবসন্তের চেয়ে কম।
সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর (সিডিসি) তথ্য অনুসারে, ১৯৫৮ সালে ডেনমার্কের এক গবেষণাগারে প্রথম বাঁদরের দেহে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস চিহ্নিত হয়। তার পর ১৯৭০ সালে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো-য় মানবদেহে এই ভাইরাসটির সন্ধান মেলে। পরবর্তী কয়েক বছরে মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে এই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ঘটে।
মাঙ্কিপক্স একটি বিরল অসুখ। সাধারণত পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকায়, বিশেষত ক্রান্তীয় রেনফরেস্ট সংলগ্ন অঞ্চলেই এই অসুখটি বেশি দেখা যায়। তবে আফ্রিকায় এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, এমনকি শহরাঞ্চলে যে সব জায়গায় আগে এ রোগ দেখা যায়নি, তেমন অঞ্চলেও এর সংক্রমণ বাড়ছে।
এই বার ৮০% আক্রান্তই ইউরোপের অধিবাসী হওয়ায় ডব্লিউএইচও জানিয়েছে যে, মাঙ্কিপক্সের বৈশ্বিক সংক্রমণ ঘটেছে। এবং, সংস্থা এই রোগটিকে আন্তর্জাতিক মাপের জনস্বাস্থ্য বিপর্যয় হিসাবে ঘোষণা করে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করার কথা জানিয়েছে।
মাঙ্কিপক্স রোগটি মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে হয়। স্মলপক্স হয় যে ভাইরাস থেকে, এটি সেই ভাইরাস ফ্যামিলিরই ( ভ্যারিওলা ভাইরাস) অন্তর্গত।
মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ অনেকটাই স্মলপক্সের মতো, তবে রোগের তীব্রতা অনেকটাই কম। এই অসুখটি খুব কম ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী, এবং চিকেনপক্স বা জলবসন্তের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।
বহু বছর ধরেই প্রধানত আফ্রিকায় মাঙ্কিপক্স হতে দেখা যেত। তবে মাঝেমধ্যে অন্য কিছু দেশেও এই রোগের সংক্রমণ ঘটতে দেখা গিয়েছে। ২০২২ সালে আফ্রিকার বাইরে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু অঞ্চলে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ঘটেছে। বর্তমানে ৭৪ টি দেশে প্রায় ১৭,০০০ মানুষ এই অসুখে আক্রান্ত। ডব্লিউএইচও মাঙ্কিপক্সের এই প্রাদুর্ভাবকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে অভিহিত করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে প্রথম মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের সন্ধান মেলে ভারতে— পশ্চিম এশিয়া থেকে ভারতে আসা ৩৫ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তির দেহে এই ভাইরাস পাওয়া যায়। ২৪ জুলাই ২০২২ তারিখে (ডব্লিউএইচও এই সংক্রমণকে আন্তর্জাতিক মাপের জনস্বার্থ বিপর্যয় ঘোষণা করার পরের দিন) দিল্লিতে এক আক্রান্তের নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়। এখনও অবধি ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা চার। দিল্লিতে যে সর্বশেষ আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে, তিনি ৩১ বছর বয়স্ক এক যুবক, যিনি বিদেশ ভ্রমণ করেননি।
আফ্রিকায় যদিও আক্রান্তদের মধ্যে ১৫ বছরের কমবয়সি শিশুদের সংখ্যাই বেশি, কিন্তু যে কোনও বয়সের ব্যক্তিই এই অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন। আফ্রিকার বাইরে সমকামী পুরুষদের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি বলে দেখা যাচ্ছে। তবে, এই বর্গের বাইরে থাকা বহু মানুষও মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস থেকে রোগটির সংক্রমণ ঘটে। এটি একটি ডাবল-স্ট্র্যান্ডে়ড ডিএনএ ভাইরাস (পক্সভিরিডাই পরিবারভুক্ত জেনাস অর্থপক্সভাইরাস )। সিডিসি’র মতে, এই ভাইরাসটির সঙ্গে অন্যান্য পক্স ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, যেমন:
এই ভাইরাসটি প্রধানত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার ক্রান্তীয় রেনফরেস্ট অঞ্চলেই পাওয়া যায়। গবেষণাগারে বন্দি বাঁদরের শরীরে প্রথম এই ভাইরাসটির সন্ধান মেলে। এই ভাইরাসের দু’টি উপবর্গ হল কঙ্গো বেসিন ক্লেড ও ওয়েস্ট অ্যাফ্রিকান ক্লেড— যে ভৌগোলিক অঞ্চলে প্রথম সেই উপবর্গগুলির সন্ধান মিলেছিল, তার নাম অনুসারেই এই নামকরণ করা হয়েছে।
বাঁদর ছাড়াও আফ্রিকান কাঠবেড়ালি এবং গাম্বিয়ান পাউচড ইঁদুরের মধ্যেও এই ভাইরাসটির সন্ধান মিলেছে। এই সব প্রাণীর মাংস খাওয়া মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণের একটি বড় কারণ হতে পারে।
অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করুন
পশু থেকে মানুষের মধ্যে যে ভাবে সংক্রমণ ছড়াতে পারে:
১. আঁচড় বা কামড়ের মাধ্যমে
২. বন্য প্রাণী শিকার করে পাওয়া মাংস থেকে
৩. সংক্রমিত কোনো পশুর শরীরের কোনও রস বা চোট-আঘাতের সংস্পর্শে এসে
শ্বাসনালী, চামড়ার উপরের ক্ষত, অথবা মুখ, নাক বা চোখের মিউকাস মেম্ব্রেন-এর মাধ্যমে ভাইরাসটি শরীরে ঢুকতে পারে।
একজন ব্যাক্তির মধ্যে সংক্রমণ হলে তা অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। বিশেষ করে আক্রান্তের পরিবারের সদস্য, বা হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে এই সংক্রমণের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। এই ভাইরাসটি বায়ুবাহিত পথে (শ্বাসপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে) শরীরে প্রবেশ করতে পারে, আবার সরাসরি সংক্রমিত ব্যক্তির দেহরসের সংস্পর্শে এলেও সংক্রমণ ঘটতে পারে।
যৌন সম্পর্কের সময়, বা সংক্রমিত বিছানার মতো দেহরসের সংস্পর্শে থাকা বিভিন্ন জিনিসের মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটতে পারে, এমন কিছু ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির শয্যা, বা ঘর, অথবা একই বাসনপত্র ব্যবহার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। মুখের লালার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে, এমন আচরণে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে ইনকিউবেশন পিরিয়ড, অর্থাৎ সংক্রমিত হওয়া থেকে উপসর্গগুলি টের পাওয়া অবধি মোটামুটি ৬ থেকে ১৩ দিন সময় লাগে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ৫ থেকে ২১ দিন সময়ও লাগতে পারে।
এই রোগটিকে দু’টি সময়-পর্বে ভাগ করা যায়:
১. সংক্রমণ-পর্ব, যা ০-৫ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই সময় তীব্র মাথায় যন্ত্রনা, জ্বর, পিঠে ব্যথা, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া (লিম্ফাডেনোপ্যাথি), পেশিতে ব্যথা (মায়ালজা), শরীরে শক্তির অভাবের (ইনটেন্স অ্যাস্থেনিয়া) মতো উপসর্গ দেখা যায়। গুটিবসন্ত, জলবসন্ত বা হামের মতো অসুখের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক উপসর্গগুলির মিল রয়েছে, তবে একমাত্র এই সংক্রমণের ক্ষেত্রেই লিম্ফাডেনোপ্যাথি দেখা যায়।
২. সাধারণত জ্বর আসার এক থেকে তিন দিনের মধ্যে ত্বকে গুটি দেখা দিতে থাকে। সাধারণত মুখেই বেশি গুটি বেরোয়। নাকের উপরের অংশের চেয়ে মুখের চারপাশের অংশে বেশি গুটি বেরোতে দেখা যায়। ৭৫% ক্ষেত্রে হাতের তালু এবং পায়ের পাতায় গুটি বেরোয়, আর ৯৫% ক্ষেত্রে মুখে গুটি বেরোয়। ৭০% ক্ষেত্রে মুখের মিউকাস মেম্ব্রেনে, ৩০% ক্ষেত্রে যৌনাঙ্গে, এবং ২০% ক্ষেত্রে কর্নিয়া সমেত চোখে গুটি বেরোতে দেখা যায়। ছড়ানোর প্রথম পর্যায়ে গুটিগুলি প্রথমে সমতল ফোস্কার অবস্থায় থাকে (ম্যাকিউল), তার পরে ধীরে ধীরে স্ফীত হয় (প্যাপিউল), পরের ধাপে তার মধ্যে স্বচ্ছ জলীয় পদার্থ ভরে ওঠে (ভেসিকল), তার পর সেই ফোস্কার মধ্যে হলুদ রঙের জলীয় পদার্থ জমা হয় (পস্টিউল)। তার পরে উপরের অংশটি খোসার মতো শুকিয়ে যায়, এবং খসে পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে অল্প কয়েকটি ফোস্কাও বেরোতে পারে, আবার হাজার হাজার ফোস্কাও বেরোতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, যত ক্ষণ না ত্বকের বড় অংশ খসে পড়ছে, তত ক্ষণ অবধি সেই জায়গায় ফোস্কা জমতেই থাকে।
মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহ স্থায়ী হয়, এবং তার পর নিজে থেকেই সেরে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে রোগটির জটিল আকার ধারণ করার সম্ভাবনা বেশি। রোগীর শারীরিক অবস্থা কেমন, কী ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, কতখানি ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে, তার উপর রোগের তীব্রতা নির্ভর করে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি থাকলে মাঙ্কিপক্স সংক্রণ মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
আগে স্মলপক্সের টিকা দেওয়া হত বলে মাঙ্কিপক্সের থেকেও সুরক্ষা পাওয়া যেত। কিন্তু, স্মলপক্স নির্মূল হওয়ায় গোটা পৃথিবীতেই গত পঞ্চাশ থেকে চল্লিশ বছর আগে এই রোগের টিকা দেওয়া ক্রমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, এখন যাঁদের বয়স ৪০ থেকে ৫০ বছরের কম, তাঁদের মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি হতে পারে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণে মৃত্যুর হার ০ থেকে ১১%, শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার তুলনায় বেশি। তবে ইদানীং কালে এই সংক্রমণে মৃত্যুর হার ৩ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে থাকতে দেখা গেছে ।
মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ থেকে সেকন্ডারি ইনফেকশন, সেপসিস, ব্রঙ্কোনিউমনিয়া, এনকেফেলাইটিস এবং কর্নিয়ার সংক্রমণ হতে পারে, যা থেকে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন।
যদি গর্ভাবস্থায় মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ ঘটে, তবে শিশুর শরীরে জন্মগত অসুস্থতা থাকতে পারে, এমনকি গর্ভাবস্থায় শিশুটির মৃত্যুও হতে পারে। শৈশবে যাঁদের স্মলপক্সের টিকা নেওয়া আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই রোগের উপসর্গগুলি তুলনায় মৃদু হতে পারে।
তবে মনে রাখা দরকার, মাঙ্কিপক্স বা স্মলপক্স কোনও টিকাই গর্ভাবস্থায় নেওয়া অনুমোদিত নয়।
কোনও ব্যক্তি যখন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত অপর কোনও ব্যক্তি, পশু বা কোনও জিনিস থেকে এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসে, তখনই এই ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। এই ভাইরাস শ্বাসনালী, মিউকাস মেমব্রেন (মুখ, চোখ বা নাক), এমনকি ত্বকের ফাটা অংশ (খালি চোখে দেখা না গেলেও) দিয়েও মানুষের শরীরে ঢুকতে পারে।
মাঙ্কিপক্স এক ব্যক্তি থেকে অন্য জনের দেহে সংক্রমিত হতে পারে, তবে এমন সংক্রমণ তুলনায় কম ঘটে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ তখনই ঘটে, যখন কেউ কোনও আক্রান্ত ক্ষত, মামড়ি, নিশ্বাসের সঙ্গে মিশে থাকা জলকণা বা মুখের লালার সংস্পর্শে আসেন। সাধারণত ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শ, যেমন আদর করা, চুমু খাওয়া বা যৌনতার মাধ্যমেই এই সংক্রমণ ঘটতে পারে। তবে গবেষকরা এখনও নিশ্চিত নন যে, বীর্য বা যোনিরসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায় কি না। সে বিষয়ে গবেষণা চলছে।
সংক্রমিত ব্যক্তির বা পশুর ব্যবহৃত পোশাক, বিছানা বা অন্য কোনও কাপড় থেকেও দেহে সংক্রমণ ঘটতে পারে।
পশু থেকে মানুষে সংক্রমণ
আক্রান্ত পশুর কামড় বা আঁচড় থেকে, রক্ত, দেহরস বা পক্সের ফোস্কার ক্ষতের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ থেকে পশু থেকে মানুষের শরীরে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ঘটতে পারে। তা ছাড়া সংক্রমিত বিছানার চাদর বা অন্যান্য জিনিস, যাতে এই ক্ষতের অংশ থেকে গিয়েছে, তা থেকেও সংক্রমণ ছড়ানো সম্ভব। আক্রান্ত প্রাণীর শিকার করা মাংস থেকেও সংক্রমণ হতে পারে। এখানে শিকার করা মাংস বলতে সাধারনত বন্য প্রাণীর কাঁচা, বা অতি সামান্য রান্না করা মাংসের কথা বলা হয়েছে।
মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ
মানুষ থেকে মানুষে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ সাধারণত লার্জ রেসপিরেটরি ড্রপলেট, অর্থাৎ নিশ্বাসের সঙ্গে মিশে থাকা বড় আকারের জলকণা থেকে হয়ে থাকে। এই ধরনের জলকণা কয়েক ফুটের চেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে না। তার ফলে, আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে দীর্ঘ সময় মুখোমুখি সংস্পর্শে এসে থাকলে তবেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শারীরিক সম্পর্কে এলে, যেমন আদর করা, চুমু খাওয়া বা যৌনতার মাধ্যমে কেউ যদি কোনও আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষত, মামড়ি বা মুখের লালার সংস্পর্শে আসেন, তা হলেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। গবেষণা চলছে, কিন্তু বীর্য বা যোনিরসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায় কি না, সে বিষয়ে গবেষকরা এখনও নিশ্চিত নন। এই ভাইরাসে সংক্রমিত জিনিস, যেমন কাপড় এবং পোশাকের সংস্পর্শে এলেও সংক্রমণ ঘটতে পারে।
মাঙ্কিপক্স সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহ থাকে। উপসর্গ শুরু হওয়ার সময় থেকে গুটিগুলি সম্পূর্ণ সেরে গিয়ে নতুন চামড়া তৈরি না হওয়া পর্যন্ত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। উপসর্গহীন ব্যক্তির থেকে অন্যদের দেহে এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে না।
মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে আফ্রিকান ইঁদুরের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়, তবে এই ভাইরাসের মূল বাহক (বা, যে প্রাণীর শরীরে ভাইরাসটি সংরক্ষিত থাকে) কী, তা এখনও জানা যায়নি।
যেহেতু মাঙ্কিপক্স একটি বিরল অসুখ, ফলে আপনার চিকিৎসক প্রথমে একে স্মলপক্স, চিকেনপক্স বা হামের মতো অন্য কোনও র্যাশ ভেবে ভুল করতে পারেন। তবে ফুলে যাওয়া লিম্ফ নোড (লিম্ফাডেনোপ্যাথি) উপসর্গ দিয়ে অন্য পক্স থেকে মাঙ্কিপক্সকে আলাদা করা যায়।
মাঙ্কিপক্স কি না, তা বোঝার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত ব্যক্তির দেহের ফেটে যাওয়া ফোস্কা থেকে টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করেন, এবং সেটিকে নিরাপদ ভাবে (জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিধি মেনে) নির্দিষ্ট পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে দেন। পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন-এর (পিসিআর) সংবেদনশীলতা এবং কার্যকারিতার জন্য এই টেস্টটিকে মাঙ্কিপক্স চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য করা হয়। তার পর মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের মাত্রা বা আক্রান্তের দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পেরেছে, তা জানার জন্য আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হতে পারে।
সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গগুলি নিজে থেকেই সেরে যায়। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত অনেকেরই চিকিৎসার দরকার হয় না, এবং তাঁরা নিজে থেকেই সেরে ওঠেন। রোগটি ধরা পড়লে চিকিৎসকরা রোগীর পরিস্থিতির দিকে লক্ষ রাখেন, রোগীর শরীরে যাতে জনশূন্যতা দেখা না দেয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন, রোগের উপসর্গগুলিকে কমাতে চেষ্টা করেন, এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ হলে তা আটকাতে অ্যান্টিবায়োটিক দেন।
এই মুহূর্তে মাঙ্কিপক্সের কোনও নির্দিষ্ট প্রামাণ্য চিকিৎসা নেই। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধে কাজ হতে পারে, কিন্তু মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসাপদ্ধতি হিসাবে তা নিয়ে এখনও কোনও গবেষণা হয়নি।
তবে যেহেতু মাঙ্কিপক্স এবং স্মলপক্স ভাইরাস জিনগত ভাবে তুলনীয়, তাই স্মলপক্স সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার জন্য যে সব অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ বা টিকা ব্যবহার করা হয়, তা মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
যে সব রোগীর গুরুতর ভাবে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে, যেমন যাঁদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা দু্র্বল, তাঁদের টেকোভিরিম্যাট-এর (TPOXX) মতো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
আপনার শরীরে যদি মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ দেখা দেয়, তা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনি কোনও মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন কি না, সে কথা বিবেচনা করার প্রয়োজন নেই।
কী কী কারণে কেউ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হতে পারেন, সে বিষয়ে সচেতনা বৃদ্ধি এবং এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে কী করা উচিত, সে বিষয়ে মানুষকে অবহিত করে তোলাই মাঙ্কিপক্স ঠেকানোর সবচেয়ে বড় রণকৌশল। এই রোগ প্রতিরোধে এবং নিয়ন্ত্রণে টিকা কার্যকর হতে পারে কি না, এবং সেই টিকাকরণ আদৌ সম্ভব কি না, সে বিষয়ে এখন গবেষণা চলছে।
আক্রান্ত পশু থেকে মানুষে সংক্রমণ কমানো, এবং মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করা যাচ্ছে কি না, তার উপরই মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধ করার সাফল্য নির্ভর করছে। এই রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর সেরা পন্থা হল:
মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো
রোগের প্রাদুর্ভাবের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নতুন সংক্রমণের উপর নজরদারি, এবং দ্রুত শনাক্তকরণ করা জরুরি। যখন মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ চলছে, তখন আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক নৈকট্য পরিহার করুন।
আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের, এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বাড়ির কোনও সদস্য আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে পৃথক ভাবে তাঁর জন্য নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করুন। নয়তো অন্যদের ঝুঁকি বাড়বে।
যে স্বাস্থ্যকর্মীরা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বা সম্ভাব্য-আক্রান্তদের সেবা করছেন, বা তাঁদের শারীরিক নমুনা সংগ্রহ করছেন, তাঁদের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের প্রামাণ্য নিয়মবিধি মেনে চলা উচিত। যদি সম্ভব হয়, তা হলে মাঙ্কিপক্স রোগীদের সেবা করার জন্য এমন স্বাস্থ্যকর্মীদেরই নিয়োগ করা উচিত, যাঁদের আগেই স্মলপক্সের টিকা নেওয়া রয়েছে।
পশু থেকে মানুষে (জুনোটিক) সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো
দেখা গিয়েছে যে, মানুষের শরীরে যে সংক্রমণগুলি ঘটে, তার অধিকাংশই প্রাথমিক ভাবে ছড়িয়েছিল পশু থেকে মানবদেহে। কোনও রকম নিরাপত্তা ছাড়াই বন্য জন্তুর সংস্পর্শে আসা, বিশেষত অসুস্থ বা মৃত জন্তুর সংস্পর্শে আসা, তাদের রক্ত, মাংস বা শরীরের অন্য কোনও অংশের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই বিধেয়। এ ছাড়াও, কোনও প্রাণীর মাংস বা শরীরের অংশ রয়েছে, এমন কোনও খাবার খেলে তা খুব ভাল ভাবে রান্না করে নেওয়া উচিত।
কিছু দেশ ইঁদুর জাতীয় প্রাণী ও মানব-ভিন্ন অন্য কোনও প্রাইমেট আমদানির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বন্দি অবস্থায় থাকা কোনও প্রাণীর যদি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়, তবে তাকে অন্যান্য প্রাণীর থেকে আলাদা করতে হবে, এবং অবিলম্বে কোয়ারান্টিন করতে হবে। আক্রান্ত প্রাণীটির সংস্পর্শে এসেছে, এমন সব প্রাণীকেই কোয়ারান্টিন করতে হবে। এই প্রাণীগুলির দেখভাল করার সময় প্রামাণ্য সুরক্ষা বিধি অবলম্বন করতে হবে, এবং ৩০ দিন নজর রাখতে হবে যে, মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ দেখা দেয় কি না।
আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) সুপারিশ করেছে যে, যাঁরা মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন, এবং যাঁদের এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা বেশি, তাঁদের টিকা নিতে হবে। এ ছাড়াও যাঁদের টিকা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাঁরা হলেন:
১. মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন বলে গণস্বাস্থ্য আধিকারিকরা যাঁদের চিহ্নিত করেছেন
২. এমন লোক, যাঁরা সম্ভবত মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন, যেমন
৩. এমন লোক, কর্মসূত্রে যাঁদের অর্থোপক্সভাইরাসের সংস্পর্শে আসতে হতে পারে, যেমন:
৪. কিছু নির্বাচিত স্বাস্থ্যকর্মী ও গণস্বাস্থ্যকর্মী
এখনও অবধি এই রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর মূলত এমন দেশগুলি থেকে আসছে, যেখানে সচরাচর মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে না। এখনও অবধি বেশির ভাগ সংক্রমেণের ঘটনাই ঘটেছে স্পেন, পর্তুগাল, ব্রিটেন এবং আমেরিকায়।
তবে, কোভিড-১৯ বা হামের মতো রোগের ভাইরাস যেমন বায়ুবাহিত হতে পারে, মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস তা নয়, ফলে এই ভাইরাসের বিস্তার ও সংক্রমণ ঠেকানো ও নিয়ন্ত্রণ করা তুলনায় অনেক সহজ।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে যে স্বাস্থ্যবিধিগুলি রয়েছে, যেমন মাস্ক ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘরে বায়ু চলাচলের পরিমাণ বৃদ্ধি করা, অসুস্থ বোধ করলে বাড়ি থেকে না বেরনো, সেগুলি মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে। নিয়মিত হাত পরিষ্কার রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ডিএনএ ভাইরাস, যার পক্ষে কোনও সমতলে টিকে থাকা সহজতর।
বিভিন্ন দেশে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা বাড়ছে। এই রোগটি চরিত্রে স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের মতোই, তবে তুলনায় কম প্রবল। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাইরাস-আক্রান্ত দেহরসের মাধ্যমেই মাঙ্কিপক্স ছড়ায়, এই রোগটি কোভিড-১৯ বা হামের মতো বায়ুবাহিত নয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন যে, স্মলপক্সের টিকা এবং চিকিৎসা যেহেতু আংশিক ভাবে হলেও এই রোগ প্রতিরোধে সক্ষম, তাই এখনই উদ্বেগের কারণ নেই। পাশাপাশি, কোভিড-১৯’প্রতিরোধে যে স্বাস্থ্যবিধি পালন করার কথা বলা হয়েছে, যেমন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বা হাত পরিষ্কার রাখা, তা এই রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে।
যে সব দেশে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস সচরাচর পাওয়া যায় না, এখন তেমন দেশেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। এখন অবধি যত জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই স্পেন, পর্তুগাল, ব্রিটেন এবং আমেরিকায় রয়েছেন।
ভারতে এখন অবধি আক্রান্তের সংখ্যা চার। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দিল্লির বাসিন্দা এক ৩৪ বছরের যুবক, যিনি কখনও বিদেশে যাননি। ২৪ জুলাই ২০২২ তাঁর মাঙ্কিপক্স ধরা পড়ে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি)-কে মাঙ্কিপক্স পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখতে বলেছে। পাশাপাশি, আক্রান্তের সংখ্যা যদি বৃদ্ধি পায়, তা হলে সরকার আক্রান্ত দেশগুলি থেকে আসা যাত্রীদের এয়ারপোর্টেই স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারে।
যদি মাঙ্কিপক্স হয়েছে বলে সন্দেহ করেন, তা হলে কোনও জেনারেল ফিজিশিয়ানকে দেখান। তিনি প্রথমে আপনাকে পরীক্ষা করে দেখবেন, এবং তার পর রোগনির্ণয় সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ হতে কিছু পরীক্ষা করাবেন। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীদের কোয়ারান্টিন করা উচিত, যাতে তাঁদের থেকে আর রোগ না ছড়ায়।
এই রোগের যে পর্যায়ে ত্বকের উপর গুটি বেরোতে থাকে, তখন সফ্ট টিস্যু ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের পরে এনসেফেলাইটিস, নিউমোনিটিস, এবং চোখ সংক্রান্ত অন্য জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে, এই ক্ষেত্রে সংক্রমণের তীব্রতা গুটিবসন্তের মতো প্রবল নয়।
মাঙ্কিপক্স থেকে জ্বর, গায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা হতে পারে, লিম্ফ নোড ফুলে যেতে পারে, এবং ত্বকে র্যাশ বেরোতে পারে। র্যাশ বেরোনোর সময় প্রথমে ত্বকের উপর দাগ তৈরি হয়, এবং তার পর সেগুলি ক্রমে জলভরা ফোস্কার আকার ধারণ করে। ফোস্কাগুলি সেরে গেলে তার উপরের মামড়ি শুকিয়ে যায়, এবং খসে পড়ে। কারও কারও ক্ষেত্রে অন্য কোনও উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে ত্বকের উফর ব্রণ/ফোস্কার মতো দাগ তৈরি হতে পারে।
হ্যাঁ। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গগুলি স্মলপক্সের উপসর্গের মতোই, কিন্তু তুলনায় কম তীব্র। এ ছাড়াও, মাঙ্কিপক্স থেকে মৃত্যুর সম্ভাবনা কম।
নীচের সতর্কতাগুলি মেনে চললে মাঙ্কিপক্স এড়ানো সম্ভব হতে পারে:
১. যে প্রাণীর শরীরে এই ভাইরাস থাকতে পারে, তার প্রত্যক্ষ ছোঁয়াচ এড়িয়ে চলুন। যে সব অঞ্চলে মাঙ্কিপক্স ছড়াচ্ছে, সেখানে কোনও প্রাণী অসুস্থ হলে, অথবা মৃত অবস্থায় পাওয়া গেলে তার প্রত্যক্ষ ছোঁয়াচ এড়িয়ে যেতে হবে।
২. কোনও অসুস্থ প্রাণীর সংস্পর্শে এসেছে, এমন কোনও জিনিস এড়িয়ে চলুন।
৩. কেউ আক্রান্ত হলে তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা রাখুন, যাতে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ না ছড়ায়।
৪. আক্রান্ত প্রাণী বা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে হাত পরিষ্কার রাখুন। সাবান ও জল দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে নিন, অথবা অ্যালকোহল-বেসড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করুন।
৫. অসুস্থ মানুষের পরিচর্যা করার সময় পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) ব্যবহার করুন।
৬. এ ছাড়াও, স্মলপক্সের টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধ করতে প্রায় ৮৫ শতাংশ কার্যকর।
At Apollo, we believe that easily accessible, reliable health information can make managing health conditions an empowering experience. AskApollo Online Health Library team consists of medical experts who create curated peer-reviewed medical content that is regularly updated and is easy-to-understand.